০৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

প্লিজ কেউ ছেড়ে যাইয়েন না’ স্লোগান নিয়ে শিবিরের ব্যঙ্গ

আক্তারুজ্জামান
  • Update Time : ০৬:০২:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৮২ Time View

ঢাকা : ডাকসুর ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলামের জুলাই আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট উক্তি ‘প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থানের ১২ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর পরই এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৮ জন শিক্ষার্থী আবিদুল ইসলামের ‘প্লিজ কেউ ছেড়ে যাইয়েন না’ এবং ‘আপনাদের ভাই ছেড়ে যাওয়ার মানুষ না’ উক্তিকে ব্যাঙ্গাত্বকভাবে উপস্থাপন করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, ওমর ফারুক (ইইই ২০-২১ সেশন), নাহিদ হাসান (আল কুরআন ২০-২১), নাইমুর রহমান (অর্থনীতি ২১-২২), সোহান (ল ১৭-১৮), রোকনুজ্জামান রোকন (মার্কেটিং ১৯-২০), মোজাম্মেল (দাওয়াহ ২১-২২), আবদুল্লাহ নুর মিনহাজ (আল হাদিস ২০-২১)। তারা সবাই ইবি শাখা ছাত্র শিবিরের হল ও ফ্যাকাল্টির কর্মীর বলে জানা গেছে।

অভিযুক্তদের দাবি, ডাকসু নির্বাচনের সময় একটি ভিডিওতে এক ছাত্রীকে আবিদুলকে উদ্দেশ্য করে বলতে শোনা যায়, “ভাইয়া হারেন-জিতেন ছেড়ে যাইয়েন না, প্লিজ।” জবাবে আবিদুল বলেন, “তোমার ভাই ছেড়ে যাওয়ার লোক না।” মূলত এরকম ভিডিওগুলো দেখেই আমরা এই ভিডিও বানিয়েছি।

জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নাহিদুর রহমান এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্ট করার তিন দিন পর, গতকাল শুক্রবার রাতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এ নিয়ে ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলাম খান লেখেন,“পাঁচজন শহীদের রক্তে ভেজা ঐতিহাসিক এই লাইনটুকুও শিবিরের উগ্রতা থেকে রেহাই পায়নি। আমি বিশ্বাস করি, এই উগ্রতায় পুরো জাতি লজ্জিত হবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা লেখেন, “কথাটাতে ভুল কোথায়? আবিদ জুলাইয়ের উত্তাল সময়ে, ৫ আগস্টের গুলিবর্ষণের মধ্যে বলেছিলেন—‘প্লিজ, কেউ কাউকে ছেড়ে যাবেন না’। কিন্তু আমরা কেউ একসাথে থাকতে পারিনি। সবাই বিভক্ত হয়ে গেছে। গুজব, হিংসা আর অবিশ্বাস দানা বেঁধেছে। তাই বলে কি অভ্যুত্থান মিথ্যা হয়ে যায়? ঐক্যের বাণী মিথ্যা হয়ে যায়? এটাই প্রশ্ন রেখে যাচ্ছি আপনাদের কাছে।”

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদী লেখেন,“এইসব স্টুপিডিটি বন্ধ করতে হবে। আবিদের রাজনীতি আপনার পছন্দ না-ও হতে পারে, কিন্তু সে জুলাইয়ের নিবেদিতপ্রাণ যোদ্ধা। তার বক্তব্যটি জুলাইয়ের এক অনবদ্য দলিল।”

এদিকে ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলামের উক্তিকে ব্যঙ্গ করে ভিডিও তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একদল শিক্ষার্থী। শনিবার ( ১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় ক্যাম্পাসের বটতলায় এ কর্মসূচি করেন তারা। এছাড়াও এ ঘটনায় শাস্তির দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে শাখা ছাত্রদল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

প্লিজ কেউ ছেড়ে যাইয়েন না’ স্লোগান নিয়ে শিবিরের ব্যঙ্গ

Update Time : ০৬:০২:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকা : ডাকসুর ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলামের জুলাই আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট উক্তি ‘প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থানের ১২ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর পরই এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৮ জন শিক্ষার্থী আবিদুল ইসলামের ‘প্লিজ কেউ ছেড়ে যাইয়েন না’ এবং ‘আপনাদের ভাই ছেড়ে যাওয়ার মানুষ না’ উক্তিকে ব্যাঙ্গাত্বকভাবে উপস্থাপন করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, ওমর ফারুক (ইইই ২০-২১ সেশন), নাহিদ হাসান (আল কুরআন ২০-২১), নাইমুর রহমান (অর্থনীতি ২১-২২), সোহান (ল ১৭-১৮), রোকনুজ্জামান রোকন (মার্কেটিং ১৯-২০), মোজাম্মেল (দাওয়াহ ২১-২২), আবদুল্লাহ নুর মিনহাজ (আল হাদিস ২০-২১)। তারা সবাই ইবি শাখা ছাত্র শিবিরের হল ও ফ্যাকাল্টির কর্মীর বলে জানা গেছে।

অভিযুক্তদের দাবি, ডাকসু নির্বাচনের সময় একটি ভিডিওতে এক ছাত্রীকে আবিদুলকে উদ্দেশ্য করে বলতে শোনা যায়, “ভাইয়া হারেন-জিতেন ছেড়ে যাইয়েন না, প্লিজ।” জবাবে আবিদুল বলেন, “তোমার ভাই ছেড়ে যাওয়ার লোক না।” মূলত এরকম ভিডিওগুলো দেখেই আমরা এই ভিডিও বানিয়েছি।

জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে নাহিদুর রহমান এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্ট করার তিন দিন পর, গতকাল শুক্রবার রাতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এ নিয়ে ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলাম খান লেখেন,“পাঁচজন শহীদের রক্তে ভেজা ঐতিহাসিক এই লাইনটুকুও শিবিরের উগ্রতা থেকে রেহাই পায়নি। আমি বিশ্বাস করি, এই উগ্রতায় পুরো জাতি লজ্জিত হবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা লেখেন, “কথাটাতে ভুল কোথায়? আবিদ জুলাইয়ের উত্তাল সময়ে, ৫ আগস্টের গুলিবর্ষণের মধ্যে বলেছিলেন—‘প্লিজ, কেউ কাউকে ছেড়ে যাবেন না’। কিন্তু আমরা কেউ একসাথে থাকতে পারিনি। সবাই বিভক্ত হয়ে গেছে। গুজব, হিংসা আর অবিশ্বাস দানা বেঁধেছে। তাই বলে কি অভ্যুত্থান মিথ্যা হয়ে যায়? ঐক্যের বাণী মিথ্যা হয়ে যায়? এটাই প্রশ্ন রেখে যাচ্ছি আপনাদের কাছে।”

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদী লেখেন,“এইসব স্টুপিডিটি বন্ধ করতে হবে। আবিদের রাজনীতি আপনার পছন্দ না-ও হতে পারে, কিন্তু সে জুলাইয়ের নিবেদিতপ্রাণ যোদ্ধা। তার বক্তব্যটি জুলাইয়ের এক অনবদ্য দলিল।”

এদিকে ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলামের উক্তিকে ব্যঙ্গ করে ভিডিও তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একদল শিক্ষার্থী। শনিবার ( ১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় ক্যাম্পাসের বটতলায় এ কর্মসূচি করেন তারা। এছাড়াও এ ঘটনায় শাস্তির দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে শাখা ছাত্রদল।